Logo

SMJ

Follow Me on Twitter Visit My GitHub Profile Subscribe to My YouTube Channel Open Navigation Menu

ডিটারমিনিজম vs ফ্রি উইল, কজুয়ালিটি, বাটারফ্লাই ইফেক্ট এবং কম্পিউটার প্রোগ্রামিং

Written on
Updated on

সতর্কীকরণঃ লেখাটা পুরোপুরি বৈজ্ঞানিক নয়, মেটা সাইন্স মে বি! 🙂

আমি প্রত্যয়! মানে বিশ্বাস বা অঙ্গীকার। নামের খাবনামা বলতেছি তার কারণও আছে। আগে আমি বিশ্বাস এবং প্রমাণ এই দুইটা বিষয়ের তফাৎ করতে চাই নিজের মতো করে। সবাই কমবেশি জানেন। কিন্তু আমি আমারটা বলি: আমার মতে বিশ্বাসের পিছনে কোনো লজিক থাকাটা বাধ্যতামূলক নয়। আমি কোনোকিছু কেনো বিশ্বাস করবো বা কেনো করবোনা সেটা নিতান্তই আমার বেপার। এমনকি আমি প্রমাণিত কোনোকিছুকে বিশ্বাস নাও করতে পারি। আমার এসব বলার কারণ এটাই যে প্রমাণিত কোনোকিছুকে বিশ্বাস না করা কাউকে কমবেশি সবাই ইম্যাচিউর, ডিলুশনাল বা যুক্তিহীন উপাধি দিয়ে ফেলে। আমি তা করিনা!

প্রমাণ বিষয়টা পুরোটাই যুক্তি অথবা গণিত নির্ভর। যে বিষয়ের গাণিতিক যুক্তির ভিত্তি আছে সেটাই প্রমাণ। কিন্তু যুক্তিরও কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। যাকে কন্সট্রাকশন প্রবলেম বলা হয়। যেমনঃ "আমি মিথ্যা বলছি!" - এই কথাটা সত্য নাকি মিথ্যা এটা একই যুক্তি দিয়ে প্রমাণিত করা যায় না।

এখন আসি গণিত এবং বিজ্ঞান নিয়ে। অনেকে মনে করেন যে গণিত এবং বিজ্ঞান একই জিনিশ, অথবা এরা একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ। আমি সেটা মানিনা। আমার মতে বিজ্ঞান গণিতের উপর নির্ভরশীল হলেও গণিত কোনোভাবেই বিজ্ঞানের উপর নির্ভরশীল নয়। সোজা কথায় সব সাইন্টিফিক ফ্রেমওয়ার্কের ম্যাথম্যাটিক্যাল মডেল দাঁড় করানো গেলেও সব ম্যাথম্যাটিক্যাল ফ্রেমওয়ার্কের সাইন্টিফিক ফ্রেমওয়ার্ক দাঁড় করানো যায়না।

অনেকেই বলেন যে গণিত প্রকৃতির ভাষা। কিন্তু এটা আসোলে তারচেয়েও বেশিকিছু। প্রকৃতির ভাষা ম্যাথম্যাটিক্যাল ল্যাংগুয়েজের একটা সাবসেট মাত্র।

আমি কম্পিউটার সাইন্স (গণনা বিজ্ঞান 😜) এর ছাত্র। এটা অনেক বিশদ একটা বিষয়। কিন্তু আমার কম্পিউটার সাইন্সের অন্যান্য বিষয়গুলোর চাইতে প্রোগ্রামিং সেক্টরটাই সবচাইতে পছন্দের (কম্পিউটার সাইন্সের সাথে প্রোগ্রামিং বিষয়টা ইন্টারচেঞ্জেবল হয়ে গেছে। মানুষ মনে করে কম্পিউটার সাইন্সে পড়লেই প্রোগ্রামার হয়ে গেছে। বিষয়টা আসোলে সেরকম নয়!)।

কিন্তু মজার বেপার হলো এই প্রোগ্রামিং বা কম্পিউটার সাইন্স কোনোকালেও আমার প্রথম ভালোবাসা ছিলোনা! তারপরও তার সাথে একরকম জোর করে ঘর করা। অবশ্য নিজের পছন্দেই বিয়েটা করা! প্রথম প্রেম ছিলো কসমোলজি! এখনো ভালোবাসাটা আছে! তবে প্রেমিকা বা বউ হিসেবে নয়, ভালো এক্স গার্লফ্রেন্ড হিসেবে। ☺

কম্পিউটার প্রোগ্রামিং বিষয়টা কোনোভাবেই জটিল কোনো বিষয় নয়, সম্পূর্ণই গণিত! সাধারণ ফাংশনাল প্রোগ্রামিং এ কোড লেখার জটিলতা থাকলেও এসব মূলত একদম পিওর হাইস্কুল ম্যাথ। পানির মতোই সহজ!

কিন্তু এখনকার একটা পপুলার এ্যাপ্রোচ হচ্ছে অবজেক্ট অরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং। অবজেক্ট কি সবাই কমবেশি জানি - বস্তু! বস্তুবাদী প্রোগ্রামিং! এটা বাস্তবভিত্তিক প্রোগ্রামিং ব্যবস্থা! আচ্ছা দাঁড়ান! বাস্তবতা বা বস্তুবাদ তো বিজ্ঞানের বিষয়! হুঁ! একদম! 🙂

অর্থাৎ ফিজিক্যাল ওয়ার্ল্ডের যেকোনো সমস্যাই এই ব্যবস্থা দিয়ে সমাধান করা সম্ভব বলে মনে করা হয়। কারণ এটা দিয়ে বাস্তব অবজেক্ট এবং ইভেন্ট গুলোর ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করা যায় সহজেই। কিন্তু মজার বেপার হচ্ছে যে এই ব্যবস্থাটা মোটেও এতোকিছু চিন্তা করে করা হয়নি।আমরা প্রোগ্রামাররা সাধারণত অলস! আর এই অলসতা ত্যাগ না করেই কিভাবে কোনো বিষয়ের সমাধান করা যায় সেটাই থাকে আমাদের মূল উদ্দেশ্য। অর্থাৎ, ম্যাক্সিমাম ইফেক্টিভনেস উইথ মিনিমাম ইফোর্ট- ইফিশিয়েন্সি! ☺

আমি ব্যক্তিগতভাবে এখন আর ফাংশনাল প্রোগ্রামিং তেমন একটা করিনা। মোটামুটি OOP নির্ভর। এই OOP বিষয়টা আসোলে একইসঙ্গে অনেক সহজ এবং অনেক জটিল একটা বিষয়। ঠিক আমার চিন্তাগুলোর মতো! চিন্তাভাবনাগুলো বেশিরভাগ সময়ই অনেক জটিল হয়ে যায়। কিন্তু প্রকাশ করতে বেগ পেতে হয়, তাই যথাসম্ভব ইলিগ্যান্ট ভাবে প্রকাশের চেষ্টা করি। সেজন্য অনেক বেশি কথা বলতে হয়। সেজন্য আমি ব্যক্তি হিসেবে ইন্ট্রোভার্ট হয়েও মোটামুটি বাচাল। 😒

OOP করতে গিয়ে প্রথমেই দুইটা সহজ কনসেপ্ট জানতে হয়ঃ ক্লাস এবং অবজেক্ট। বিষয় দুইটা আসোলেই সিম্পল। তারপরও আমাদের দেশের ছাত্রদের এই OOP কন্সেপ্ট বুঝতে বেগ পেতে হয়। এমনকি বেশিরভাগ গ্রাজুয়েটই গ্রাজুয়েশন শেষ করে OOP তে অস্বচ্ছ কিংবা অসম্পূর্ণ ধারণা নিয়ে। এবং এর কারণে আসোলে আমরা ভালো কিছু করতে পারিনা! 😤

এখন একটু OOP এর বেসিক ধারণা দেই: ক্লাস একটা কাস্টম বা ইউজার ডিফাইন্ড ডাটা টাইপ... উম... নাহ! হচ্ছেনা! 😒
আচ্ছা! ক্লাস হচ্ছে একটা ম্যাথম্যাটিকাল ধারণা। নাহ! তাও হচ্ছেনা! 😤
ওকে! ক্লাস হচ্ছে কিছু ম্যাথম্যাটিক্যাল অবজেক্টের সেট। ফাইন! সেট কি আমরা সবাই কমবেশি জানি, বুঝি (হয়তো)। ম্যাথম্যাটিক্যাল অবজেক্ট কি তাহলে? 🤔
ম্যাথম্যাটিক্যাল ফ্রেমওয়ার্কের যেকোনো ইনফরমেশন। হতে পারে কোনো ভ্যারিয়াবল, কোনো কন্সট্যান্ট, হতে পারে অন্য কোনো ক্লাস।
সোজা কথায় OOP পুরোটাই ম্যাথের সেট থিওরির অংশ। বাকি ক্যালকুলেশন ফাংশনাল।

কিন্তু এখানে ছোট্টো একটা সমস্যা আছে: ক্লাস নিজে একটা অ্যাবস্ট্রাকশন! মানে এটা একটা গাণিতিক ধারণা। এর কোনো বাস্তব অস্তিত্ব নাই! বাস্তব অস্তিত্ব আছে ওই ক্লাসের ইন্সট্যান্স বা অবজেক্টের। উদাহরণস্বরূপ ধরুন আমরা মানুষরা সবাই একটা শ্রেণীভুক্ত। আমি এখানে লিনিয়াস সাহেবের বায়োলজিক্যাল শ্রেণীবিভাগের কংক্রিট রেফারেন্স দিচ্ছিনা। নিজ দায়িত্বে ভুল বুঝে নিবেন!

আচ্ছা! আমরা তাহলে বলতে পারি যে পৃথিবীর এবং মহাবিশ্বের সকল মানুষ হলো মানুষ ক্লাসের অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু সমস্যা হলো একটা মানুষ চিন্তা করেন তো এই মুহুর্তে। আসোলে মানুষ কি? হাত আছে, নাক, মুখ আছে, কথা বলে দুই পায়ে হাঁটে - এরকম একটা প্রাণী, তাইতো? কিন্তু সমস্যা হলো সবাই একই মানুষকে কল্পনা কখনোই করবেনা। কারণ আসোলে ওরকম কোনো মানুষের অস্তিত্বই নাই। পুরোপুরি অবাস্তব। অ্যাবস্ট্রাকশন। কেউ হয়তো "আকাশ" নামের কোনো মানুষকে কল্পনা করবে আবার কেউ হয়তো "নদী" নামের কোনো মানুষকে কল্পনা করবে। এরা দুজনেই মানুষ শ্রেনীর হলেও সম্পুর্ণ ভিন্ন দুটি এনটিটি। এবং এরা বাস্তব! অবজেক্ট! 🙂

এখানেই বিজ্ঞান এবং গণিতের মূল পার্থক্য। আমরা অবাস্তব, অ্যাবস্ট্রাক্ট কিছু গাণিতিক বিষয়ের সাহায্য নিয়ে বিজ্ঞানের বিষয়বস্তু ব্যাখা করতে পারি। কিন্তু সব গাণিতিক বিষয়কে সঙ্গায়িত বিজ্ঞানে প্রকাশ করতে পারিনা! 🙂

এতোক্ষণ ধরে আসোলে ভূমিকা টানলাম! দীর্ঘ ভূমিকা! 😜
এটা মনে হয় আমার এপর্যন্ত সবচাইতে বড়ো লেখা হতে যাচ্ছে। লেখালেখিতে আমি বরাবরই কাঁচা, সাথে অলসতা তো আছেই।

যাইহোক, আজকে কিছু বিষয়ে চিন্তা শেয়ার করার উদ্দেশ্য নিয়ে লিখতে ধরছি। দেখি কতদূর কি হয়!

আমি প্রত্যয়। ছোটোবেলায় আমার বাবা একবার আমাকে বাড়ির পাশের নদীর চরে নিয়ে গিয়েছিলো শেষরাতে ঘুম থেকে তুলে। পিঠে করে। 🙂
উদ্দেশ্য ছিলো আমাকে তারা খসা (উল্কা বৃষ্টি) দেখানো। বিশ্বাস করেন! আমার অনুভূতির জগতে সবচাইতে সুন্দর অনুভূতি এটা! আমার জীবনের সবচাইতে সুন্দর অভিজ্ঞতা! ♥
পুরো করতোয়ার চর দৌড়ে বেড়িয়েছি খসে পড়া তারা ধরার জন্য! 😁

সেই থেকে শুরু! কৌতূহল! সেই কৌতূহল মেটাতাম আবার দুইভাবে: দাদার কাছ থেকে বিশ্বাস আর বাবার কাছ থেকে বিজ্ঞান ভিত্তিক ব্যাখ্যা দিয়ে। কিন্তু দেখা যেতো যে সেগুলো বেশিরভাগ সময়ই মিলতনা। বাবা কে জিজ্ঞেস করতাম, কোনটা ঠিক?
তখন তিনি বলতেনঃ এটা আপেক্ষিক! বিশ্বাস প্রমাণের বিষয় না। মানুষ যা দেখে তাও বিশ্বাস করতে পারে, আবার চাইলে না দেখেও বিশ্বাস করতে পারে। শুধু পারেনা ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য বিষয়বস্তুর বাইরের কোনোকিছু কল্পনা করতে।

আমি সরাসরি কোনো উত্তর পাইনি। শুধু বুঝেছিলামঃ ইট ডিপেন্ডস!

যাইহোক, একদিন সম্ভবত দাদাকে জিজ্ঞেস করছিলাম যে সবকিছু যদি ঈশ্বরের ইচ্ছামতো হয় তাহলে আমার ইচ্ছার দাম কই? আমার কৃতকর্ম কেনো ম্যাটার করবে?
আবার যদি সবকিছু আমার ইচ্ছামতো হয় তাহলে ঈশ্বর কেনো ম্যাটার করবে?

ভয়লা! ফ্রি উইল ভার্সেস ডিটারমিনিজম।

এটা ইউনিক বা নতুন কোনো চিন্তা ছিলোনা। আদিম একটা বিতর্ক। কিন্তু আমার কচি মনে এটা স্বতঃস্ফূর্তভাবেই এসেছিলো। ছোটো ছিলাম বলেই হয়তো দাদা ওই বিষয়ে আরও চিন্তা করতে দিতে চাননি। তাই বলেছিলেন সেটা শুধুমাত্র তিনিই (ঈশ্বর) জানেন! 🙂

কিন্তু তিনি ব্যর্থ! আমি থামিনি! ওই চিন্তা ঘুরপাক খেতো সবসময়ই। তখন এরকম ইন্টারনেট ছিলোনা, রিসোর্সও ছিলোনা। আমার রিসোর্স আমার বাবা আর দাদা। আমি ভাবতাম আমার বাবা সব জানেন! 😎

কিন্তু এই প্রশ্নের উত্তর পাইনি। কিন্তু আমি বরাবরই জ্বেদী। ছোটোবেলায় হাত পা ছোড়াছুঁড়ি, মাটিতে শুয়ে পড়ারও অভ্যাস ছিলো। এখনো জ্বেদ আছে। তবে বয়স বাড়ার সাথে সাথে সেই জ্বেদ শুধুমাত্র নিজের উপর খাটানোর শিক্ষাটা নিতে হয়েছে! 🙂

তো উনি আমার জ্বেদের কারণেই হোক বা আমার আগ্রহের কারণেই হোক নিজেও এসব বিষয়ে পড়াশুনা করা শুরু করে দিয়েছিলেন। অন্তত জোর দিছিলেন।

মানুষ মায়ের কাছ থেকে শিশুশিক্ষা বা প্রাথমিক শিক্ষা পেলেও আমি পাইছি আমার বাবার কাছ থেকে। কারণ তখন আমার মা অন্য শিশুদের শিক্ষা দেওয়ায় ব্যস্ত ছিলেন! 🙂 (তিনি টিচার ছিলেন।)

ডিটারমিনিজম আর ফ্রি উইল টার্ম দুটা জানতামনা। প্রথম স্বচ্ছ ধারণা হয় প্রোগ্রামিং করতে গিয়ে। আরও নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে সিমুলেশন এ্যান্ড মডেলিং সাবজেক্ট পড়তে গিয়ে ডিটারমিনিস্টিক সিস্টেম এবং স্টোক্যাস্টিক সিস্টেম।
ডিটারমিনিস্টিক সিস্টেমে প্রোব্যাবিলিটির কোনো খেল নাই, স্টোক্যাস্টিক এ আছে! 🙂

এখন প্রোব্যাবিলিটির ধারণা। হুঁ! সহজ এবং কঠিন। p=1-q, q=1-p সহজ না? 😉
প্রয়োগ অনেক কঠিন! চলেন শুরু করি। এটা মিউচুয়ালি এক্সক্লুসিভ। p ঘটার সম্ভাবনা, q না ঘটার সম্ভাবনা।

এখন ফ্রি উইল এবং ডিটারমিনিজম তো মিউচুয়ালি এক্সক্লুসিভ ইভেন্ট। অর্থাৎ ফ্রি উইল থাকলে ডিটারমিনিজম খাটবে না, অথবা এর উল্টো।

কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় যে প্রকৃতি সুনির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মেনে চলে: ন্যাচারাল ল। গতির সূত্র, মহাকর্ষীয় সূত্র, বলের সূত্র... এরকম কিছু সূত্র দিয়ে প্রকৃতির সব ঘটনাই মোটামুটি ব্যাখা করা যায়। অনুমান করা যায় ৬ তলা থেকে ৫৫ কেজি ভরের একটা মানুষ লাফ দিলে কি হতে পারে। সোজা কথায় ধরেই নেওয়া হয় মহাবিশ্বটা বৃহৎ স্কেলে একটা ডিটারমিনিস্টিক সিস্টেম। বৈজ্ঞানিকভাবে এটাই সত্য! কিন্তু তাহলে ফ্রি উইলের কি হবে? ফ্রি উইল বলে কি কোনোকিছু নেই?
আছে তো! এই যে আমার ইচ্ছা হলো আমি আজ অফিসে বসে আবোলতাবোল চিন্তাভাবনা লিখবো। আর আপনার ইচ্ছা হলো আপনি পড়বেন!

পরস্পরবিরোধী হয়ে গেলোনা?

আমি নিজেও আসোলে সঠিক জানিনা মহাবিশ্বের মেকানিজমটা আসোলে কি! (জানলে তো হতোই! 🙄)
এটা কি আসোলেই ডিটারমিনিস্টিক? নাকি প্রোব্যালিস্টিক (পিউর র‍্যান্ডমনেস)? নাকি দুইটার সমন্বয়?
না। কেনোনা ফ্রি উইল আর ডিটারমিনিজম আপাতদৃষ্টিতে মিউচুয়ালি এক্সক্লুসিভ।

ইদানীং কোয়ান্টাম মেকানিক্সের সাফল্যের ফলে সবার এখন প্রোব্যালিস্টিক/স্টোক্যাস্টিক মহাবিশ্ব ব্যাবস্থার দিকে ঝোঁক। কিন্তু আমি মনে করি যদি এসব সত্য হয়ে থাকে তবে বিজ্ঞান এবং সবকিছুই এবং বাস্তবতাও অর্থহীন হয়ে পড়বে। পিউর র‍্যান্ডমনেস এর কারণে সৃষ্টি হবে বিশৃঙ্খলা। আর এটা ডিটারমিনিজম এর বিপরীত। এবং এটা হলে বিজ্ঞান তার অনুমান করার ক্ষমতা হারাবে!

সুতরাং লার্জ স্কেলে মহাবিশ্ব প্রোব্যালিস্টিক হতে পারেনা। আইন্সটাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতা তাইই বলেঃ সকল কাঠামোতে বিজ্ঞানের সূত্রগুলো "একইভাবে" কাজ করবে। ট্রান্সফরমেশন করে হলেও। এখানে কিওয়ার্ডটা হলো "একইভাবে"।

আচ্ছা! যদি না হয়? মহাবিশ্ব যদি ডিটারমিনিস্টিক না হয়?
মহাবিশ্বটা যদি পিউর র‍্যান্ডমনেস নির্ভর হতো তাহলে কোনো ঘটনার আর ঠিক ঠিকানা থাকতোনা! একটা ক্যাওস বা বিশৃঙ্খল অবস্থা হতো।

কিন্তু র‍্যান্ডম ঘটনা তো হচ্ছে, হরহামেশা ঘটতেছে! হুঁ! কিন্তু এখানে আবার দুইটা টার্ম আছে: লোকাল এবং গ্লোবাল কন্টেক্সট। গ্লোবালি মহাবিশ্বটা একটা ডিটারমিনিস্টিক সিস্টেম। কিন্তু লোকাল ইভেন্টগুলা র‍্যান্ডম হওয়া গ্রহণযোগ্য। সেজন্যই হয়তো অণু পরমাণুর যে লোকাল জগত তাতে প্রোব্যাবিলিটি নির্ভর কোয়ান্টাম মেকানিক্স খাটে।

কিছু সমস্যা আছে। বিগব্যাং বা ব্ল্যাকহোল এর সিংগুলারিটিতে আসোলে কোনো কন্টেক্সট থাকেনা। এরকম এক্সট্রিম অবস্থার সিস্টেমটা তাহলে কি হবে?
জানিনা! থিওরি অফ এভরথিং লাগবে। 😃

এখন আসি মহাবিশ্ব যদি র‍্যান্ডমনেস নির্ভর হতো তাহলে কি হতো?
বলে রাখা ভালো যে বাস্তব জগতে পিউর র‍্যান্ডমনেস বলতে কোনোকিছু নাই। এটা একটা ম্যাথম্যাটিক্যাল অ্যাবস্ট্রাকশন। যা আছে তা হলো সিউডো র‍্যান্ডমনেস!

মহাবিশ্ব যদি র‍্যান্ডমনেস নির্ভর হতো তাহলে এটার ন্যাচার হতো ক্যাওটিক এবং আনস্ট্যাবল। এই আছে, এই নাই। এই তারাটা দেখা গেলো, এই হারিয়ে গেলো! কিন্তু তা হচ্ছেনা আপাতদৃষ্টিতে!

যদিওবা আমরা আরও হায়ার ডিগ্রির চিন্তা করতে পারি। পুরো মহাবিশ্বের বয়সটাকে এক সেকেন্ডের সাথে তুলনা করতে পারি। কিংবা পুরো মহাবিশ্বটাকে একটা পরমাণুর সাথে তুলনা করতে পারি। কিন্তু আপাতত থাক, অন্য কোনো সময়!

আচ্ছা তাহলে দেখা যাচ্ছে যে বাস্তবে আমরা যে র‍্যান্ডমনেস দেখি সেগুলো পিওর র‍্যান্ডম কোনো ঘটনা নয়, সিউডো র‍্যান্ডম। প্রোব্যাবল ইয়েট প্রেডিক্ট্যাবল। কিন্তু এই প্রেডিক্ট্যাবিলিটির আবার লিমিট আছে। যার কারণেই একে সিউডো র‍্যান্ডমনেস বলা হচ্ছে।
এই সিউডো র‍্যান্ডমনেস আবার একটা উইয়ারড ম্যাথম্যাটিক্যাল থিওরি মেনে চলে (সম্ভবত এই কথা বলাতে অনেক বিজ্ঞানী এবং ম্যাথম্যাটিশিয়ানের সমস্যা হবে)। কাইন্ড অফ!

ক্যাওস থিওরি! এই থিওরি অনুযায়ী একটা ডাইনামিক সিস্টেমে ইনিশিয়াল কন্ডিশনের সামান্য পরিবর্তনের কারণে স্টেট বা অবস্থাগুলোর মধ্যে অসামঞ্জস্যতা দেখা দেয়। রেগুলারিটি মেইন্টেইন করেনা। এই অবস্থাগুলো র‍্যান্ডমলি জেনারেট হয়। আসোলে অ্যাপারেন্ট র‍্যান্ডম।

উদাহরণস্বরূপ যদি একটা পেন্ডুলামের গতিপথ চিন্তা করা যায় তাহলে দেখা যাবে যে এর যেই গোলক থাকে সেই গোলক টেনে ধরে ছেড়ে দেওয়ার পজিশনের ভিত্তিতে এর গতিপথের অবস্থার পরিবর্তন হয়। একে ইনিশিয়াল কন্ডিশন বা সিড বলা হয়। কিন্তু মজার বেপার হচ্ছে এই ক্যাওস থিওরি ডিটারমিনিস্টিক ল মেনে চলে! 🙂

বাস্তবতা ঠিক থাকলো তো? 😉

এখন আসি এই ক্যাওস থিওরির একটা বাস্তব প্রয়োগে: বাটারফ্লাই ইফেক্ট! 😃
হুঁ! এটা ক্যাওস থিওরির সাথে ইন্টারচেঞ্জেবল মূলত দুইটা কারণেঃ ছবিটা দেখলেই একটা বুঝা যাবে (প্রজাপতির ডানার মতো), আরেকটা হলো ক্যাওস থিওরি সহজ ভাষায় ব্যাখ্যা করতে যে এ্যানালজিটা ব্যবহার করা হয় সেটার কারণে। এ্যানালজিটা এরকমঃ "অ্যামাজনে একটা প্রজাপতির ডানা ঝাপটানোর কারণে ডেনভারে হারিকেন হতে পারে! 🐸"

হুঁ! আসোলেই তাই। বাস্তবতা আপাতদৃষ্টি তে এরকমই। আমি একটা প্রমাণ বা উদাহরণ ইতিমধ্যে দিয়ে ফেলেছি। 🙂

সেদিন বাবা যদি ছোট্টো সম্রাট(!😑) কে ঘুম থেকে তুলে নদীর চরে "তারা খসা" দেখাতে না নিয়ে যেতো, তবে আজ হয়তো প্রত্যয় এই চিন্তাগুলো করতোনা, এই লেখা লিখতোনা! 🙂
হয়তো ছোটোবেলা থেকেই কসমোলজির সাথে প্রেম করা একটা ছেলের পলিটেকনিক এ পড়ে কম্পিউটার সাইন্সের সাথে ঘর করতে হতোনা এসএসসিতে শুধুমাত্র ০.২৫ পয়েন্ট কম থাকার কারণে ভালো কোনো কলেজে চান্স না পাবার কারণে!

ইয়েস জিপিএ ম্যাটারস! এ্যাট লিস্ট এই দেশে! 😑

এতোক্ষণ যা বললাম সবই আসোলে ওই "তারা খসা" দেখারই ফল - কজুয়ালিটি। কজ & ইফেক্ট!

এখন এই বিষয়টাতেও একটু কোয়ান্টাম উইয়ার্ডনেস খাটাই, কেমন? 🙂

আমরা জানি যে কোনো একটা ঘটনা ঘটতে তার কারণ লাগে। সেটা হতে পারে অন্য কোনো ঘটনার ফল। স্বাভাবিক! আমার একটু পর ক্ষুধা লাগবে, তারপর খাবো।

কিন্তু... কিন্তু আছে! কোয়ান্টাম এনট্যাঙ্গলমেন্ট নামে একটা বিষয় আছে। এটা একটা ওয়েভ ফাংশন। সোজা কথায় শ্রোডিংগারের ইকুয়েশন, যা ব্যাখ্যা করে বিড়াল জীবিত থাকবে নাকি মৃত! 😜

অর্থাৎ যেহেতু শ্রোডিংগারের বিড়ালের জীবিত এবং মৃত থাকা মিউচুয়ালি এক্সক্লুসিভ ঘটনা, সেহেতু হয় বিড়াল জীবিত নাহয় মৃত থাকবে। একসাথে দুই অবস্থায় নয়। কিন্তু যখন দেখবো বিড়াল জীবিত তখন মৃত বিড়ালের ওয়েভ ফাংশন কলাপ্স করবে, মৃত দেখলে উল্টাটা। কিন্তু আমরা তখনই জানতে পারবো বিড়ালটা জীবিত নাকি মৃত যখন আমরা বাক্স খুলে দেখবো, অর্থাৎ অবজারভেশন নির্ভর।

যদি দেখি বিড়াল জীবিত, তো সে জীবিতই ছিলো, মৃত দেখলে বিষ খেয়ে মরে গেছে! তো এতে এতো হুঁ হাঁ (👀) করার কি আছে? 🙄

আছে! বিষয়টা একটু এভাবে চিন্তা করেন তোঃ ধরেন বিড়ালের বাক্সটা আপনি না খুলে আপনার বন্ধুকে বললেন যে খুলে দেখ তো বিড়াল বেঁচে আছে নাকি মরে গেছে?
আপনার বন্ধু খুলে দেখে আপনাকে জানালো যে বিড়াল মৃত। আপনিও গিয়ে তাইই দেখবেন, উল্টোটা নয়!

তারমানে কেউ একজন বিড়ালটা জীবিত নাকি মৃত দেখাবে তা বলে দিচ্ছে! 🙄
কিন্তু বাক্স খোলার আগ পর্যন্ত বিড়ালটা জীবিত অথবা মৃত উভয় অবস্থাতেই থাকতে পারে! 🐱

তাহলে সমস্যাটা... 🤔
হচ্ছে গিয়ে ফলের ভিত্তিতে ঘটনা ঘটতেছে। বিড়াল মৃত দেখার সাপেক্ষে বিড়াল মরতেছে, জীবিত দেখার সাপেক্ষে বিড়াল বেঁচে থাকতেছে! কিউট বিড়াল! 🐈

কিন্তু তারমানে তো দাঁড়াচ্ছে যে ইফেক্ট প্রিসিডস কজ!!! 🤔

হুঁ! তারমানে আসোলেই তাই যে ইফেক্ট বা ফলের ভিত্তিতে কজ বা কারণ হচ্ছে! অর্থাৎ ফলের ভিত্তিতে ঘটনা!!! রিভার্স কজুয়ালিটি! মানে আমি পলিটেকনিক এ পড়বো বলেই এসএসসিতে ০.২৫ পয়েন্ট কম পাইছিলাম, ০.২৫ পয়েন্ট কম পাইছি বলে পলিটেকনিক এ পড়ছি তা নয়! 😁

আর এখন মেশিন লার্নিং ও এই থিওরি মেনেই কাজ করে! 🙂